ডিএনসিসি, এনসিসি-র রিসাইক্লিং প্রজেক্টে অর্থ সহায়তা দেবে কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন
রিসাইক্লিংয়ের জন্য নিরাপদ ও দক্ষতার সঙ্গে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কল্যাণ নিয়ে কাজ করাই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য।
ট্রিবিউন ডেস্ক
16-05-2022
ঢাকা শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সমস্যা দূর করতে কর্ডএইড বাংলাদেশের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন।
কর্ডএইড বাংলাদেশের রিসাইক্লিং ফর দ্য এনভায়রনমেন্ট বাই স্ট্রেংদেনিং ইনকাম অ্যান্ড লাইভলিহুড অফ এন্টারপ্রেনরস– রেজিলিয়েন্ট’ নামক নতুন একটি প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে জনকল্যাণমূলক এই প্রতিষ্ঠানটি।
মঙ্গলবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রিসাইক্লিংয়ের জন্য নিরাপদ ও দক্ষতার সঙ্গে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কল্যাণ নিয়ে কাজ করাই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য।
এ প্রকল্প ইকোসিস্টেম থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণের মাধ্যমে টেকসই জীবিকা নির্বাহের জন্য উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে। যা সাধারন পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং এই সংক্রান্ত বিভিন্ন সমিতির জ্ঞান ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)-এর ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুর রউফ নান্নু বলেন: "বর্জ্য সমস্যা আমাদের শহরের জন্য একটি বড় সমস্যা। পরিবেশগত সমস্যার পাশাপাশি বর্জ্য দূষণের কারণে নাগরিকদের নানা রকম স্বাস্থ্য সমস্যায়ও ভুগতে হচ্ছে। এই সমস্যার মোকাবেলায় সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতেরই অংশগ্রহণ জরুরি।”
ডিএনসিসি-র ৪০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মাদ নজরুল ইসলাম ঢালী বলেন: "সরকারের একার পক্ষে সম্পূর্ণভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সহজসাধ্য বিষয় নয়। এ কাজে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং সামাজিক সংস্থার সম্পৃক্ততার প্রয়োজন।"
তিনি আরও বলেন, "আমার বিশ্বাস বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে কর্ডএইডের এই উদ্যোগটি পরিবেশ থেকে প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস করবে এবং আমাদের চারপাশের পরিবেশের উন্নতি ঘটাতে অবদান রাখবে।"
এ প্রকল্পের সময়কাল ১২ মাস। এই সময়ের মধ্যে রেজিলিয়েন্ট ৪২০ জন সুবিধাভোগীর জীবনে ইতিবাচক প্রভাব রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর মধ্যে আছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (এনসিসি)-এর ৪০০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং ২০ জন বর্জ্য সংগ্রহকারী।
প্রকল্পটির লক্ষ্য হলো উভয় সিটি করপোরেশনে ছয়টি কারখানার মাধ্যমে প্রতি মাসে ৫০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইকেল করা।
কর্ডএইডের একজন প্রতিনিধি বলেন, "প্যাকেজড পণ্যের চাহিদা যতদিন থাকবে, বর্জ্য সমস্যাও ততদিন থাকবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও এই সমস্যা কমিয়ে আনতে বিকল্প উপায় খুঁজে বের করা আমাদের নাগরিক দায়িত্ব। রিসাইক্লিং বা সার্কুলার ইকোনমি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর সমাধান হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।"
তারা আরও বলেন, "পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি এবং প্লাস্টিক রিসাইক্লিংকে একটি লাভজনক ও মহৎ ব্যবসা হিসেবে তুলে ধরলে তা নতুন বিভিন্ন উদ্যোগ আকৃষ্ট করতে পারে। আমাদের বিশ্বাস দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের সহায়তায় আমরা পরিচ্ছন্নতাকর্মীদে প্রতি আমাদের প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে সক্ষম হব এবং রিসাইক্লিংকে একটি বিকাশমান শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারব।"
দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট সাদিয়া মাসবার্গ বলেন: "বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অনানুষ্ঠানিক খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। মূল্যবান সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে ব্যবসায়িক মডেল, জ্ঞান ও সক্ষমতার উন্নতি ঘটিয়ে প্রকল্পটি এই খাতের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে।"
সম্প্রতি, এসআর এশিয়ার "ইন্টিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট অফ প্লাস্টিক অ্যাসর্টমেন্ট অ্য্যন্ড কনট্রিবিউশন টুওয়ার্ডস গ্রিন ইকোনমি (ইমপ্যাক্ট-জিই)" নামক প্রকল্পে তহবিল প্রদান করেছে ফাউন্ডেশনটি। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো একটি কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি গড়ে তোলা এবং স্থানীয় বায়ু, পানি ও ভূমি দূষণ কমিয়ে আনা।